১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া – কম বিনিয়োগে বড় আয়

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়াঃ কম বিনিয়োগে ব্যবসা শুরু করার চিন্তা করছেন? মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে কীভাবে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা যায়, সেটাই আজকের আলোচনার মূল বিষয়। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল অবলম্বন করে খুব সহজেই আপনি একটি সফল ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন। চলুন জেনে নেই, মাত্র ১০ হাজার টাকায় শুরু করা যায় এমন ২৫ টি সেরা ব্যবসার আইডিয়া।  
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
বর্তমান সময়ে ব্যবসা করে টাকা ইনকাম করা খুবই সোজা, যদি আপনার সঠিক উপায় ও গাইডলাইন জানা থাকে। আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া। আমরা আপনাদের মাঝে ২৫ টি সেরা আইডিয়া তুলে ধরব যেগুলো আপনি পছন্দ মত বাছাই করে ব্যবসা করতে পারেন।
সূচিপত্র

১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া

মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে খুব সুন্দরভাবে একটি ব্যবসা দাঁড় করানো যায়। অনেকেই মনে করেন ব্যবসা করার জন্য বড় অংকের পুঁজি দরকার হয়, তবে বিষয়টি তেমন নয়। স্বল্প পুঁজিতেও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে সফল হওয়া যায়। 
ব্যবসার আইডিয়ার কোন অভাব নেই, হাজার হাজার ব্যবসা করার আইডি আছে যেগুলোতে আপনি টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা করে আয় করতে পারেন। তবে আমরা এখন মাত্র ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। 
কারণ সর্বনিম্ন দশ হাজার টাকা দিয়ে খুব সহজে ভালো একটি ব্যবসা করা যায়। নিম্নে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার জনপ্রিয় আইডিয়াগুলো তুলে ধরা হলোঃ 

১. অনলাইন রিসেলিং ব্যবসা

আপনি অনলাইনে পণ্য কিনে তা বিক্রি করতে পারেন। এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবসা যেখানে আপনাকে শুধু সঠিক সোর্স থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে হবে। আপনি কম দামে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ক্রয় করে সেগুলো বিক্রি করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। 

তাছাড়া পাশাপাশি পুরাতন প্রোডাক্টগুলো ক্রয় করে বিক্রি করা যায়। সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা দিয়ে এই ব্যবসাটি করতে পারবেন, শুধুমাত্র আপনাকে সঠিক সোর্স থেকে পণ্য ক্রয় করতে হবে। 

যদি আপনি কম দামে বিভিন্ন আকর্ষণীয় প্রোডাক্টগুলো ক্রয় করতে পারেন তাহলে সেগুলো বিক্রি করে অনলাইন অফলাইন দুই মাধ্যম থেকে প্রচুর অর্থ ইনকাম করতে পারবেন। 

২. কাস্টম টি-শার্ট প্রিন্টিং

টি-শার্ট প্রিন্টিং বর্তমানে অনেক লাভজনক ব্যবসা। ১০ হাজার টাকায় কিছু কাস্টম ডিজাইন করা টি-শার্ট বানিয়ে অনলাইনে বা স্থানীয়ভাবে বিক্রি করতে পারেন। এই ব্যবসাটি শুরু করা খুব সহজ, আপনি সরাসরি ডিজাইন করার মেশিন ক্রয় করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। 

তবে এক্ষেত্রে অনেক টাকা খরচ হতে পারে, এজন্য আপনি টি-শার্ট এর ডিজাইন করে দোকান থেকে প্রিন্টিং করিয়ে নিবেন। এতে করে আপনার অনেক খরচ কম হবে। 

ধীরে ধীরে যখন আপনার ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকবে তখন আপনি টিশার্ট ডিজাইন করার মেশিন ক্রয় করে নিজে থেকেই কাস্টম টি শার্ট প্রিন্টিং করে বিক্রি করে আয় করতে পারেন। 

৩. কনটেন্ট রাইটিং

অনলাইন থেকে আয় করা সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে কনটেন্ট রাইটিং করা। আপনারা কিন্তু ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করতে পারবেন। ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে এই ব্যবসাটি সবচেয়ে ইউনিক এবং অন্যতম। 

কারণ এখানে তেমন ধরনের কোন খরচ নেই। আপনার যদি আগে থেকেই কম্পিউটার অথবা মোবাইল থাকে তাহলে সেগুলো ব্যবহার করেই কন্টেন রাইটিং করতে পারবেন। আপনারা হয়তো জানেন কন্টেন রাইটিং করার জন্য একটি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার এর প্রয়োজন হয়। 

আর সাথে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হয়। আর যদি মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার না থাকে তাহলে আপনারা ১০০০০ টাকার বাজেটে সেগুলো কিনে নিতে পারবেন। কনটেন্ট রাইটিং করার জন্য নিজের ওয়েবসাইট বানাতে পারেন অথবা বিভিন্ন আইটি সেন্টারে কন্টেন রাইটিং এর কাজ করতে পারেন। 

আপনারা যদি বিনা খরচে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে চান তাহলে অর্ডিনারি আইটি এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা আপনাকে কনটেন্ট রাইটিং শিখিয়ে চাকরি দিবে। পাশাপাশি আরও অনেক সাইট আছে যারা কন্টেন্ট রাইটিং জব প্রদান করে থাকে। 

কনটেন্ট রাইটিং করার জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনি কিছু টাকা অর্থাৎ ১০ হাজার টাকার আশেপাশে খরচ হতে পারে। 

৪. মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রয়

মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রির ব্যবসাটি বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয়। কারণ বর্তমানে যুবসমাজ মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করতে পছন্দ করে থাকে। 

বিশেষ করে মোবাইল ফোনের স্টাইলিশ ব্যাক পার্ট বা ব্যাক কভার ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের মোবাইল পার্টস এর প্রয়োজন হয়। 

আপনার মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ এর দোকান খুলে ভালো ধরনের ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন। আপনারা দোকানে মোবাইল সম্পর্কিত সকল ধরনের এক্সেসরিজ মজুদ রাখবেন। 

যাতে কাস্টমার যেটা চাই সেটা সাথে সাথে দিতে পারেন। তারা এই পণ্যগুলো অনলাইনেও বিক্রয় করতে পারবেন। আপনার ফেসবুক পেজ থাকলে সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার দোকানের পণ্যগুলো বিক্রয় করতে পারবেন।

৫. ফাস্ট ফুড ব্যবসা

রাস্তার ধারে বা বাসার সামনের ছোট্ট দোকানে ফাস্ট ফুড বিক্রি শুরু করতে পারেন, যেমন- চিপস, বার্গার, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। এই ব্যবসাটি অধিক লাভজনক কারণ সকল বয়সের মানুষেরাই রাস্তার আশেপাশে থাকা দোকান থেকে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গুলো খেতে পছন্দ করে থাকে, বিশেষ করে বর্তমান সময়ে যুবক ছেলেমেয়েরা এই ধরনের ফাস্ট ফুড খাবার খেতে ভালোবাসে। তাই আপনারা চাইলে জনসমাগম এলাকাতে  ফাস্ট ফুড এর দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

৬. হোমমেড ফুড ডেলিভারি

বর্তমানে হোমমেড খাবারের চাহিদা অনেক বেশি। স্বল্প মূলধনেই এই ব্যবসা শুরু করা যায়। আপনি দশ হাজার টাকার কমেও এই ব্যবসা করতে পারবেন। ঘরে বসে খাবার বানিয়ে সেগুলো গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা একেই হোমমেড ফুড ডেলিভারি বলা হয়ে থাকে। এখানে খাবারগুলোকে আকর্ষণীয় হতে হয়। তাহলে বেশি চাহিদা পাওয়া যায়। 

৭. ইউটিউব চ্যানেল

যদি আপনার ভিডিও তৈরির দক্ষতা থাকে, তবে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে আয় করতে পারেন। এটি বর্তমান সময়ে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়। ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করার জন্য হয়তো আপনার ভালো কম্পিউটার অথবা ক্যামেরা থাকতে হবে। 

কারণ আপনি কম্পিউটার ব্যবহার করে ভিডিও এডিটিং করবেন এবং ভিডিওকে আকর্ষণীয় করে তুলবেন। পাশাপাশি ভিডিও বানানোর জন্য ক্যামেরার দরকার হতে পারে, সে ক্ষেত্রে আপনার কিছু টাকা খরচ হতে পারে। 

এছাড়া আপনি চাইলে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং কাজগুলো করতে পারেন। যার ফলে আপনি শুধুমাত্র দশ হাজার টাকার মধ্যেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারছেন। 

৮. বুটিক ব্যবসা

হাতে তৈরি বা দেশি জামা-কাপড় বিক্রির মাধ্যমে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বুটিক ব্যবসা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে মহিলারা এই ব্যবসাটি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে, আপনি যদি একজন ছেলে অথবা মেয়ে হয়ে থাকেন তাহলে নিঃসন্দেহে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। 

বুটিক ব্যবসা বা কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য বেশি মূলধনের প্রয়োজন নেই, মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে কাপড় ক্রয় করে সেগুলো নিজের হাতে আকর্ষণীয় ডিজাইন করে বানিয়ে বিক্রি করে আয় করা যায়। এছাড়া আপনি চাইলে সরাসরি রেডিমেড জামা কাপড় ক্রয় করে সেগুলো বিক্রি করে ব্যবসাটি করতে পারেন। 

৯. কফি বা চা স্টল

শহর কিংবা গ্রামে, কফি ও চা স্টল খুব জনপ্রিয়। এই ব্যবসায় তুলনামূলক কম বিনিয়োগ লাগে। তাই আপনাদের যাদের মূলধন কম আছে তারা চাইলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। চায়ের ব্যবসা করতে হলে একটি ছোট দোকান ভাড়া নিতে হবে এবং দোকানে বিভিন্ন ধরনের স্নেক জাতীয় খাবার সরবরাহ রাখতে হবে। আর চায়ের দোকানের ডেকোরেশন ভালো এবং সুন্দর হতে হবে। 

তাহলে আপনার ব্যবসা বড় হতে থাকবে। তাছাড়াও কম দামে ভালো মানের চা তৈরি করুন। যার ফলে গ্রাহকরা কম দামে চা খেতে পারবে এবং ভালো সার্ভিস পাবে। 

এতে করে আপনার দোকানের পরিচিতি বাড়বে সাথে চায়ের ব্যবসা বাড়তে থাকবে। চায়ের দোকান এর ব্যবসা আপনি ১০ হাজার টাকার মধ্যে পরিপূর্ণ গড়ে তুলতে পারবেন। শুধু আপনাকে ধৈর্য সহকারে পরিশ্রম করে কাজ করে যেতে হবে।

১০. নার্সারি

নার্সারি ব্যবসা বর্তমান সময়ে বেশ লাভজনক একটি উদ্যোগ। গাছপালা ও সবুজায়নের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার ফলে এই ব্যবসার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। আপনি যদি কম পুঁজি ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি নার্সারি ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে সহজেই ভালো উপার্জন করতে পারবেন। 

শুধুমাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে নার্সারি ব্যবসাটি শুরু করা যায়। তাই যারা ১০ হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসা করতে যাচ্ছেন তারা চাইলে নার্সারি ব্যবসা দিয়ে শুরু করতে পারেন। 

১১. ব্লগিং

নিজের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট লিখে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।বর্তমান ডিজিটাল যুগে ঘরে বসেই উপার্জনের অন্যতম সেরা উপায় হচ্ছে ব্লগিং ব্যবসা। এখানে মূলত নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিয়মিত কনটেন্ট বা আর্টিকেল প্রকাশের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করা যায়। এটি শুধু একটি ইনকাম সোর্স নয়, বরং প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম উপায়।

অনেকেই ভাবেন, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে বিশাল বাজেট দরকার। কিন্তু আসলে, মাত্র ৩,০০০ – ৫,০০০ টাকার মধ্যেই আপনি একটি চমৎকার ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। 
  • বেসিক ওয়েবসাইট (Blogger/Custom Domain): ৩,০০০ টাকা
  • ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট (Domain + Hosting): ৫,০০০ টাকা
তাহলে বুঝতেই পারছেন, ১০,০০০ টাকারও কম পুঁজিতে ব্লগিং ব্যবসা শুরু করা একদমই সম্ভব

১২. হ্যান্ডমেড জুয়েলারি

নিজের হাতে তৈরি গয়না বিক্রি করে ভালো আয় করা যায়। তবে হ্যান্ড মেড জুয়েলারিগুলো অবশ্যই আকর্ষণীয় ইউনিট হতে হবে। অনেকেই বিভিন্নভাবে আকর্ষণীয় হ্যান্ড মেড জুয়েলারি বানিয়ে থাকে, আর এগুলো চাহিদা অনলাইনে খুবই বেশি। 

অনলাইন এর মাধ্যমে এই হ্যান্ডমেড জুয়েলারি বিক্রি করতে পারেন। তবে এই ব্যবসাটি থেকে আয় করা অনেক কঠিন যদি, আপনি সঠিকভাবে জুয়েলারি তৈরি না করতে পারেন। এজন্য প্রথমে কিভাবে হ্যান্ডমেড কাস্টম জুয়েলারি তৈরি করতে হয় তা শিখুন এরপর বানিয়ে ব্যবসাটি শুরু করুন।  

১৩. অনলাইন কোর্স বিক্রয়

বর্তমান ডিজিটাল যুগে আপনার দক্ষতাকে উপার্জনের সুযোগে পরিণত করা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হন এবং সেটি শেখানোর ক্ষমতা রাখেন, তাহলে অনলাইনে কোর্স করিয়ে ঘরে বসেই আয় করতে পারেন।

অনলাইনে কোর্স করানোর মাধ্যমে ইতোমধ্যে অনেকেই ভালো আয় করছেন এবং এটি এখন একটি সফল ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ভালো বিষয়বস্তু, মানসম্মত ভিডিও এবং কার্যকর মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে আপনিও সহজেই সফল হতে পারেন।

১৪. দর্জির দোকান

কাপড় সেলাই করতে জানেন, তাহলে দর্জির দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমান সময়ে দর্জির দোকানের অনেক চাহিদা রয়েছে। প্রতিনিয়ত মানুষ জামা কাপড় ঠিক করার জন্য এবং জামা কাপড়ের সাইজ ঠিক করার জন্য দর্জির দোকানে গিয়ে থাকে। 

আপনি যদি দর্জির দোকান দেন তাহলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার দর্জির দোকানটির পরিচিতি বাড়াতে হবে। আর আপনার কাপড় সেলাই সহ অন্যান্য বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে। 

১৫. বাচ্চাদের খেলনা ব্যবসা

কম দামে পাইকারি খেলনা কিনে খুচরা বিক্রি করতে পারেন। আপনারা জানেন বাচ্চারা খেলনা দিয়ে খেলতে ভালোবাসে। ছোটকালে এমন কোন বাচ্চা নিয়ে যারা খেলনা দিয়ে খেলে নাই, প্রতিটি বাচ্চাই ছোটকালে খেলনা নিয়ে খেলাধুলা করে থাকে। 

আপনার যদি একটি খেলনার দোকান থাকে তাহলে সেখান থেকে আপনি প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা বেশি উপার্জন করতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই আপনার খেলনার দোকানটির লোকেশন সঠিক জায়গায় হতে হবে। 

আর আপনি যদি কম দামে বিক্রি করতে পারেন তাহলে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। মূল কথা আপনি কম দামে খেলনা ক্রয় করে খুচরা দামে বিক্রি করবেন। তাহলে ১০ হাজার টাকায় এই ব্যবসাটি করে অনেক লাভবান হওয়া যাবে। 

১৬. কম্পিউটার সার্ভিসিং

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ রয়েছে, আর প্রযুক্তি ব্যবহার যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সমস্যাও। তাই কম্পিউটার সার্ভিসিং ব্যবসা এখন একটি চাহিদাসম্পন্ন ও লাভজনক পেশা হয়ে উঠেছে।

আপনি যদি কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান দিতে পারেন, তাহলে নিজস্ব কম্পিউটার সার্ভিসিং সেন্টার খুলে ভালো উপার্জন করতে পারবেন। এটি এমন একটি ব্যবসা, যেখানে কম বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হওয়া সম্ভব।

১৭. লন্ড্রি ব্যবসা

কাপড় পরিষ্কার ও কাপড় ইস্ত্রি করার দক্ষতা আছে, তাহলে এই ব্যবসাটি নির্দ্বিধায় শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাতে তেমন ধরনের পুঁজি দরকার হয়না। শুধুমাত্র একটি দোকান ভাড়া নিতে হয় এবং কাপড় পরিষ্কার করার মেশিন অথবা কাপড় ইস্ত্রি করার যন্ত্রের প্রয়োজন হয়।  

এসব সরঞ্জাম জোগাড় করতে পারলেই আপনারা যেকোনো সময়ে লন্ডি ব্যবসা করতে পারবেন। বর্তমানে মানুষজন সময়ের অভাবে বাড়িতে কাপড় ইস্ত্রি করতে চাই না ফলে লন্ডিতে দিয়ে আসে। এজন্য লন্ড্রি ব্যবসার অধিক চাহিদা রয়েছে।

১৮. ফুলের দোকান

বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানকে টার্গেট করে আপনারা ফুলের ব্যবসা করতে পারেন। বর্তমানে যে কোন অনুষ্ঠানেই মানুষজন ফুল নিয়ে যায় গিফট দেওয়ার জন্য। আপনারা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফুলের তোড়া বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। 

বিশেষ করে যেসব উৎসব ফুলের চাহিদা বেশি সেই সময়ে এই ব্যবসা গুলো শুরু করতে পারেন। ফুলের ব্যবসা বর্তমানে অধিক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যার ফলে যে কেউ কম খরচে ও কম পুঁজিতেই এই ব্যবসা করতে পারে।

১৯. ফলের জুসের দোকান

গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমে সবাই ঠান্ডা পানির পাশাপাশি ঠান্ডা ফলের জুস খেতে ভালোবাসে। এই সুযোগে ফলের জুসের ব্যবসা শুরু করা বেশ লাভজনক হতে পারে। আপনি বিভিন্ন ধরনের তাজা ফল সংগ্রহ করে সেগুলোর জুস তৈরি করে ঠান্ডা অবস্থায় বিক্রি করতে পারেন। 

এই ব্যবসা শুরু করতে আপনাকে খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না, কারণ আপনি কম খরচে একটি ছোট্ট দোকান বা স্টল দিয়ে ব্যবসা চালু করতে পারেন।

এছাড়াও, আপনি অনলাইনে এই ফলের জুসগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করতে পারেন। গরমের দিনে আপনার জুসের চাহিদা অনেক বাড়বে, যা আপনার ব্যবসার জন্য এক দারুণ সুযোগ। সতেজ ফল, স্বাস্থ্যকর এবং ঠান্ডা জুসের চাহিদা বাড়ানোর মাধ্যমে কম সময়ে ভালো আয় করতে পারবেন।

২০. গিফট আইটেম বিক্রয়

অনলাইন শপিং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে, বর্তমানে অনেকে অনলাইনে গিফট আইটেম ক্রয় করে থাকে। বিশেষ করে অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অথবা প্রিয় মানুষকে গিফট দেয়ার জন্য কম দামে ভালো মানের গিফট খুজে থাকে।  

আর তারা বেশিরভাগ গিফট খোঁজার জন্য অনলাইনে সার্চ করে থাকে এবং অনলাইন থেকে কিনে থাকে। এজন্য আপনারা চাইলে অনলাইনে একটি গিফট শপ খুলতে পারেন। যেখানে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় গিফট বক্স বানিয়ে বিক্রয় করতে পারেন। 

আর অবশ্যই মনে রাখবেন গিফট গুলো হবে ইউনিক , আকর্ষণীয় ও সৃজনশীলতা ধরনের। আপনার বাজার থেকে পাইকারি দামে গিফটের উপাদান গুলো কিনে গিফট বক্স বানিয়ে খুচরা দামে বিক্রি করতে পারেন। 

এভাবেই ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করে বড় ধরনের ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন। এর জন্য আপনারা ধৈর্য ও পরিশ্রম করতে হবে।১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া অনুযায়ী এটি আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে।

২১. শিশুদের বই ও স্টেশনারি বিক্রয়

শিশুদের বই ও স্টেশনারি আইটেম বিক্রি করতে পারেন। এটি অনেক লাভজনক ব্যবসা। কম বিনিয়োগে এই ব্যবসা করা যায়, তাই আপনি ব্যবসা নিয়ে আর চিন্তাভাবনা করে সঠিক পরিকল্পনা করে এই ব্যবসাটি শুরু করুন। স্টেশনারি দোকানটি অবশ্যই স্কুল ও কলেজের আশেপাশে হতে হবে তাহলে প্রচুর বিক্রি করা যাবে। 

২২. অনলাইন টিউশনি

ঘরে বসে অনলাইনে ছাত্রদের পড়িয়ে আয় করতে পারেন। এটি অনেক পুরাতন ব্যবসা হলেও বর্তমানে বেশ লাভজনক। কারণ আপনার নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা আছে তাহলে বাড়িতে বেকার বসে থাকবেন কেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়িয়ে ইনকাম করুন। বিশেষ করে আপনি সরাসরি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে গিয়ে পড়িয়ে আয় করতে পারেন। পাশাপাশি অনলাইন এর মাধ্যমে টিউশন দিয়ে ঘরে বসে আয় করতে পারেন। 

২৩. মোবাইল সার্ভিসের দোকান

তাছাড়াও মোবাইল সার্ভিস এর দোকান খুলেও ব্যবসা করতে পারেন। কারণ বর্তমানে সকলেরই কমবেশি মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এ সময় তারা ভাল মানের মোবাইল সার্ভিসের দোকান খুঁজে থাকে। আপনি চাইলে একটি ভালো মনের মোবাইল সার্ভিসের দোকান খুলে টাকা আয় করতে পারেন। 

এর জন্য আপনার দোকানের পরিচিতি বাড়াতে হবে এবং মোবাইল সার্ভিস সেবা ভালো দিতে হবে। কম খরচে ভালো মানের সার্ভিস দিলেই আমি আপনার ব্যবসা বড় আকারে দাঁড় করাতে পারবেন। আপনি বাজারে ছোট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে প্রথম দিকে অল্প পুঁজিতে মোবাইল সার্ভিসিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

২৪. পুরনো বইয়ের ব্যবসা

বইপ্রেমী মানুষদের কাছে পুরনো বইয়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পুরনো বই বিক্রয়ের ব্যবসা অনলাইনে বেড়ে চলেছে। আপনারাও চাইলে পুরনো বই সংগ্রহ করে অনলাইনে তা বিক্রয় করে ব্যবসা করতে পারেন। 

অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা আছে যারা নতুন বই কিনতে পারেন না, ফলে তারা এক বছর আগের পুরনো বই কিনতে চায়। এজন্য আপনারা তাদের চাহিদা গুলো পূরণ করতে এবং আপনার লাভজনক ব্যবসা গড়ে তুলতে পুরনো বইয়ের ব্যবসা করতে পারেন। 

এখানে আপনাকে অবশ্যই এনালাইসিস করে বইগুলো সংগ্রহ করতে হবে। কারণ সকল ধরনের বই বিক্রি হয় না। যে ধরনের বই মানুষ বেশি পছন্দ করে এবং আকর্ষণীয় সেই ধরনের বইগুলো সংগ্রহ করতে হবে। আর অবশ্যই পুরনো বইগুলোর কন্ডিশন ভালো থাকতে হবে। তাহলে মানুষজন কিনতে আগ্রহী হবে। ১০ হাজার টাকার কম পুজিতেই আপনারা এ ধরনের ব্যবসা করে তুলতে পারেন।

২৫. হাঁস মুরগির খামার

অল্প পুঁজিতে হাঁস-মুরগির ছোট খামার শুরু করা সম্ভব। আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যবসাটি শুরু করেন, তবে এর মাধ্যমে ভালো উপার্জন করতে পারবেন। গ্রামে প্রায় সবাই হাঁস-মুরগি পালন করে থাকে, কিন্তু শহরে এটি তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়। তাই শহরে হাঁস-মুরগি পালন করে আপনি একটি লাভজনক ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন।

আপনার প্রথম কাজ হবে, সিদ্ধান্ত নেওয়া আপনি হাঁস পালন করবেন, নাকি মুরগি পালন করবেন।

যদি মুরগি পালন করতে চান, তবে প্রথমে মুরগির জন্য একটি উপযুক্ত বাসস্থান তৈরি করতে হবে। ভালো মানের বাসস্থান তৈরি করতে আপনি মাত্র ৫,০০০ টাকার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন। এরপর বাকি ৫,০০০ টাকা দিয়ে মুরগির বাচ্চা কিনতে হবে, তবে অবশ্যই বাচ্চাগুলোর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা জরুরি।

এইভাবে মাত্র ১০,০০০ টাকা দিয়ে আপনি একটি ছোট খামার শুরু করতে পারবেন, যা ভালো লাভের দিকে নিয়ে যাবে।

উপসংহার

আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটিতে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা অনেক ইউনিক আইডিয়া শেয়ার করেছি, যেগুলো অনুসরণ করে হয়তো আপনি ভালো ধরনের ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন। ব্যবসা করে ইনকাম করতে হলে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে সেটি হলো পরিশ্রম। সঠিক পরিশ্রম ও কৌশলের মাধ্যমে ব্যবসা করে ইনকাম করা সম্ভব। তাই পরিশ্রম করে সঠিকভাবে ব্যবসা করুন অবশ্যই সফল হবেন। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url