ভালো রাউটার চেনার উপায় ও সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি দেখুন
বাসা বাড়িতে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভালো একটি
রাউটার ক্রয় করতে হবে। রাউটার ভালো হলেই আপনি ইন্টারনেট স্পিড ভালো পাবেন এবং
পাশাপাশি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের রেঞ্জ অনেক দূর পর্যন্ত পাবেন। যার কারণে আপনাকে
অবশ্যই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ রাউটার ক্রয় করতে হবে। আর এজন্যই আমরা আজকের
আর্টিকেলটিতে ভালো রাউটার চেনার উপায় ও সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করছি।
আপনি যদি রাউটার সম্পর্কে কিছু তথ্য না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে
পড়ুন। কারণ আমরা পুরো আর্টিকেলে ভালো রাউটার চেনার উপায় গুলোর সম্পর্কে আলোচনা
করব। যাতে করে আপনি ভালো রাউটার চিনে ক্রয় করে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও
সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনগুলো সেগুলোও আলোচনা করা হবে। তাই শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত
জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
সূচিপত্র
ভূমিকা
ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, আর ভালো দ্রুত গতি
সম্পন্ন ইন্টারনেটের জন্য দরকার ভালো মানের রাউটার। কিন্তু বাজারে এত ব্র্যান্ড ও
মডেলের রাউটার থাকায় সঠিকটি বেছে নেওয়া বেশ কঠিন হতে পারে। অনেকেই না জেনে কম
গতির বা দুর্বল কভারেজের রাউটার নিয়ে সমস্যায় পড়েন।
এই গাইডে আমরা আপনাকে দেখাবো, কীভাবে একটি ভালো রাউটার চেনা যায়, কোন ফিচারগুলোর
দিকে খেয়াল রাখা উচিত, এবং কোন ভুলগুলো এড়িয়ে চলা ভালো। যদি আপনি দ্রুতগতির,
স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদে ভালো পারফরম্যান্স দেওয়া রাউটার খুঁজে থাকেন, তাহলে
এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। চলুন, জেনে নিই ভালো রাউটার চেনার সহজ উপায়।
ভালো রাউটার চেনার উপায়
বাজারের প্রায় বিভিন্ন ব্যান্ডের ভালো মানের রাউটার রয়েছে। তবে এর মধ্যে কোন
রাউটারটি ভালো হবে এটি বলা যায় না। কিন্তু আপনি কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে
রাউটার ক্রয় করতে পারেন। অর্থাৎ ভালো রাউটার কেনার উপায় অনুসরণ করে একটি ভালো
মনের রাউটার ক্রয় করে ব্যবহার করতে পারেন। মূল কথা হলো আপনাকে ভালো মানের রাউটার
কিনতে হলে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। সেই সম্পর্কে এখন আমরা আপনাদের
জানাবো।
- কভারেজ এরিয়া
- নেটওয়ার্ক রেঞ্জ
- ডিভাইস সংখ্যা
- রুম সংখ্যা
- রাউটার অ্যান্টেনা
কভারেজ এরিয়া
ভালো রাউটার চেনার উপায় এরমধ্যে প্রথম পূর্ব শক্ত হলো তার কভারেজ এরিয়া।
কভারেজ এরিয়া হল আপনার রাউটারের সিগনাল কতদূর পর্যন্ত যাবে অর্থাৎ আপনি
রাউটারের নেটওয়ার্ক সিগনাল যতদূর পর্যন্ত ব্যবহার করতে চান তার
পরিমাপ।
ভালো রাউটার কেনার পূর্বে অবশ্যই আপনাদের তার কভারেজ এরিয়া সম্পর্কে জেনে
নেওয়া উচিত। সাধারণত রাউটারের কভারেজ এরিয়াযত বেশি হবে রাউটারের
ফ্রিকোয়েন্সি তত বেশি হবে এবং রাউটার তত ভালো হবে।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের জন্য কোন ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো
আমাদের দেশে রাউটার সাধারণত ২.৪ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সির বেশি ব্যবহৃত হয়ে
থাকে। এই রাউটার গুলোতে সাধারণত ৩২ টি ডিভাইস পর্যন্ত কানেক্ট করতে পারে
অর্থাৎ রাউটারটি ৩২টি ডিভাইসকে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ অ্যাপ ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
তবে বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের রাউটার বের হয়েছে। তবে
বর্তমানে ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার বের হয়েছে যার ফ্রিকোয়েন্সি অনেক বেশি আর
এটি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।
২.৪ গিগাহার্জ ও ৫ গিগাহার্জ সমন্বয়ে গঠিত এই ডুয়েল ব্যান্ড ফ্রিকুয়েন্সি
রাউটার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই ডুয়েল ব্যান্ড
ফ্রিকোয়েন্সি রাউটার একটি সিঙ্গেল ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি রাউটার হতে দ্বিগুণ
শক্তিশালী সার্ভিস দিয়ে থাকে।
ধরুন একটি সিঙ্গেল ব্যান্ড ফ্রিকুয়েন্সির রাউটার ৩২টি ডিভাইস এ সার্ভিস দিতে
পারে, আর অপরপক্ষে একটি ডুয়েল ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি রাউটার ৬৪টি ডিভাইসে
সার্ভিস দিতে পারে অর্থাৎ এই রাউটার ৬৪টি ডিভাইস ইন্টারনেট সেবা নিতে
পারবে।
তাহলে বুঝতে পারছেন ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার সিঙ্গেল এর চেয়ে কতটা শক্তিশালী।
এবার আপনি যদি কভারেজ এরিয়া আপনার ১ থেকে ২টি রুম এর মধ্যে রাখতে চান , আর
ডিভাইস ব্যবহারকারী সংখ্যা যদি তিন থেকে পাঁচটি হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য
সিঙ্গেল ব্যান্ড(Single Band) রাউটার সবচেয়ে ভালো হবে আর এটি আপনার জন্য
যথেষ্ট। এতে করে আপনার খরচ কম হবে এবং আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আর আপনি যদি ওয়াইফাই সিগনাল আরো বেশি দূরে অর্থাৎ কভারেজ এরিয়া যদি বাড়াতে
চান এবং আপনি ৩ থেকে ৪টি রুমে ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার জন্য ডুয়েল
ব্যান্ড(Dual Band) রাউটারটি হবে সেরা। এতে করে আপনি পাঁচ থেকে ছয়টি ডিভাইস
ব্যবহার করতে পারবেন। তবে মাথায় রাখা উচিত এতে করে আপনার হালকা একটু খরচ
বেড়ে যাবে।
এবার আসা যাক আপনি যদি বড় কভারেজ এর জন্য অর্থাৎ অফিসের জন্য রাউটার ক্রয়
করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি উচ্চ মানের ভালো রাউটার এর সাথে সাথে
রিপিটার ব্যবহার করতে হবে।
তাছাড়া বাজারে এখন উচ্চমানের রাউটার যেমন
ট্রাই-ব্যান্ড (Tri-Band) পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই রাউটারে ক্রয় খরচ
বেশি। তবে আরেকটি বিষয় মনে রাখা উচিত আপনি যদি শুধুমাত্র একটি রুমে ওয়াইফাই
ব্যবহার করতে যান তাহলে আপনি তার যুক্ত wired রাউটার ব্যবহার করতে
পারেন।
সাধারণত বড় কভারেজের জন্য ওয়ারলেস রাউটার ব্যবহার করা হয়। ওয়ারলেস রাউটার
সাধারণত ওয়াইফাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। তাই যদি
আপনার কভারেজ এরিয়া বড় হয় তাহলে আপনি ওয়ারলেস রাউটার কিনবেন।
নেটওয়ার্ক রেঞ্জ
রাউটার কেনার ক্ষেত্রে রাউটারের রেঞ্জ কত এ বিষয়টি জেনে অবশ্যই কিনতে হবে।
কারণ আপনি কতদূর পর্যন্ত সিগন্যাল পৌঁছাতে চান তার উপর নির্ভর করে রাউটারের
রেঞ্জ পরীক্ষা করে কিনতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে সাধারণত রাউটারের রেঞ্জ
যত বেশি হবে, আপনার রাউটার তত বেশি এরিয়া পর্যন্ত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদান
করতে পারবে।
ধরুন আপনার রাউটার বাড়িতে লাগানো আছে যেটির রেঞ্জ অনেক বেশি। এখন যদি আপনি
আপনার বাড়ির রাস্তা সামনে গিয়ে ওয়াইফাই চালান তাহলেও চালাতে পারবেন কারণ
আপনার রাউটারের রেঞ্জ বেশি হওয়ার কারণে তার সিগনাল রাস্তা পর্যন্ত
যাচ্ছে।
তাহলে বুঝতে পারছেন রাউটারের নেটওয়ার্ক রেঞ্জ বেশি হলে আপনি সবগুলো রুমে
অথবা বড় এরিয়ায় নেটওয়ার্ক সার্ভিস পাবেন। যদি ওয়্যারলেস রাউটারের কথা
বলা যায় তাহলে এটি ইনডোরে বা ঘরের ভেতরে ১৫০ ফুট পর্যন্ত রেঞ্জ অর্থাৎ
কভারেজ দিয়ে থাকে।
আর আউটডোর এর ক্ষেত্রে অর্থাৎ ঘরের বাইরে ৩০০ ফুট পর্যন্ত রেঞ্জ প্রদান করে
থাকে। তাই আপনি যদি একটি বড় বাড়ি অথবা বড় স্থান জুড়ে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক
কভারেজ রাখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই রাউটারের পাশাপাশি রিপিটার ব্যবহার
করতে হবে।
আবার আপনি বড় কভারেজ এর জন্য অর্থাৎ রেঞ্জ পাওয়ার জন্য আউটডোর রাউটার
ব্যবহার করতে পারে। এই আউটডোর রাউটার গুলো সাধারণত এক থেকে দুই কিলোমিটার
পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে পারে। এর থেকে বেশিও দিতে পারে। তবে আপনি যদি পুরো এলাকা
জুড়ে নেটওয়ার্ক কভারেজ দিতে চান তাহলে আপনাকে ওয়াইম্যাক্স(WIMAX)
লাগাতে হবে।
ডিভাইস সংখ্যা
ভালো রাউটার চেনার ক্ষেত্রে আরেকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ডিভাইস
সংখ্যা অর্থাৎ রাউটারটিতে আপনি কতটি ডিভাইস একসাথে ব্যবহার করতে পারবেন এবং
আপনার রাউটারটি একসাথে ব্যবহৃত অনেকগুলো ডিভাইস গুলোর চাপ নিতে পারবে কিনা এই
বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় কম দামের রাউটার হয় একসাথে অনেকগুলো ডিভাইস কানেক্ট
করলে রাউটারটি বেশি চাপ নিতে পারে না ফলে ইন্টারনেট মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয়
অর্থাৎ সিগনাল ভালো মতো দিতে পারেনা এই সমস্যাটি বেশিরভাগ হয়ে থাকে।
যখনই অনেকগুলো ডিভাইস রাউটারে কানেক্ট করা হয় তখন রাউটারের পারফরম্যান্স এর
উপর চাপ পড়ে। তাই অবশ্যই কয়টি ডিভাইস ব্যবহার করবেন তার সংখ্যা অনুযায়ী
রাউটার নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশের বর্তমানে বাসা বাড়িতে সাধারণত রাউটারের স্পিড ১৫০ এমবিপিএস থেকে
৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে যত দিন যাচ্ছে প্রযুক্তি দিনে দিন আপডেট
হচ্ছে। ফলে এখন বাজারে অনেক উন্নতমানের 2000 এমবিপিএস এর রাউটার পাওয়া
যাচ্ছে। এছাড়াও রাউটারে অনেক ধরনের উন্নতি করা হয়েছে।
রাউটার ব্যবহারে রুম সংখ্যা
ভালো মানের রাউটার ক্রয় করতে হলে অবশ্যই আপনাকে রুমের সংখ্যা বিবেচনায় রেখে
রাউটার ক্রয় করতে হবে। কেননা আপনি কয়টি রুমে ওয়াইফাই সিগন্যাল অর্থাৎ
ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে রাউটার ক্রয়
করতে হবে।
কারণ আপনার বাসায় রুমের সংখ্যা কত তার ওপর নির্ভর করে রাউটার কিনতে হবে।
রাউটারের সিগন্যাল রুমের দেওয়াল, দরজা, জানালা ভেদ করে যেতে বেশি শক্তিশালী
রাউটারের প্রয়োজন হয়।
রাউটারের সিগন্যাল কতদূর পর্যন্ত যায় অর্থাৎ রাউটারের রেঞ্জের উপর নির্ভর
করে কিনবেন। তাই রুমের সংখ্যা গণনা করে তার উপর নির্ভর করে শক্তিশালী
গতিসম্পন্ন রাউটার কেনা প্রয়োজন। তারা আগে জেনে নিতে হবে আপনি যে রাউটারটি
কিনছেন সেটি আপনার সবগুলো রুমে সিগন্যাল পৌঁছাতে পারবে কিনা তা সম্পর্কে আগে
জেনে বুঝে ক্রয় করতে হবে।
রাউটার অ্যান্টেনা
ভালো রাউটার চেনার ক্ষেত্রে আরেকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাউটারের
এন্টিনা। আপনার রাউটারের এন্টেনা যত বেশি হবে তত বেশি রাউটার ভালো
পারফরম্যান্স দিবে এর সাথে সাথে, ভালো কভারেজ ও রেঞ্জ দিবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে একাধিক অ্যান্টেনাযুক্ত রাউটার বের হয়েছে যেগুলো
বেশিরভাগ দ্রুত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং ওয়াইফাই
এরিয়া বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
বিশেষ করে যেসব রাউটারের অ্যান্টেনা সংখ্যা বেশি তাদের রেঞ্জ বেশি হয়ে থাকে।
আর রেঞ্জ বেশি থাকলে বুঝতে পারছেন আপনি রাউটার ব্যবহার করে ওয়াইফাই অনেক দূর
পর্যন্ত অর্থাৎ আপনার পুরো বাসায় ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সিগন্যাল ব্যবহার করতে
পারবেন।
এর সাথে সাথে ওয়াইফাই রাউটারের নেটওয়ার্ক স্পিড বেড়ে যায়। তাই অবশ্যই
বেশি এন্টেনাযুক্ত রাউটার ক্রয় করার চেষ্টা করবেন।
সবচেয়ে ভালো রাউটার কোনটি
সর্বোত্তম রাউটার নির্বাচন আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরন, বাজেট, এবং
নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন
ব্র্যান্ড ও মডেলের রাউটার পাওয়া যায়, যা মূলত বিভিন্ন দামের মধ্যে হয়ে
থাকে। নিচে কিছু ভালো ব্যান্ডের রাউটার এর মডেল গুলো তুলে ধরা হলোঃ
- ASUS RT-N12+
- Tenda F-3
- Netgear WNR614
- টিপি-লিংক আর্চার C20
- TP-Link TL-WR840N (V2)
- DIR-615 N300
- মাইক্রোটিক hEX RB750Gr3
- TL-WR820N
রাউটার নির্বাচন করার সময় আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরন, বাজেট, এবং
নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। উপরের মডেলগুলি বিভিন্ন
ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপযোগী হতে পারে। সর্বোত্তম পছন্দের জন্য আপনার নির্দিষ্ট
চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন। এবার রাউটার গুলো সম্পর্কে কিছুটা
বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
Netgear WNR614
আপনি যদি রাউটারের কভারেজ বাড়াতে চান অথবা ইন্টারনেট স্পিড বৃদ্ধি করতে
চান তাহলে এর রাউটারটি আপনার জন্য হবে সেরা। কারণ এই রাউটারটিতে ইন্টারনেট
স্পিড বৃদ্ধি করার জন্য এক্সট্রা করে এন্টেনা রয়েছে যা ব্যবহার করে রেঞ্জ
সহ স্পিড বাড়ানো যাবে।
আপনি অনলাইন কাজের জন্য অথবা ভিডিও স্ট্রিম করার জন্য এর রাউটারটি পছন্দ
করতে পারেন। রাউটারটির দাম ১৫০০ টাকা যাতে রয়েছে এক বছরের ওয়ারেন্টির
সুবিধা। এছাড়া হাই সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে।
TP-Link TL-WR840N (V2)
টিপি লিংক কোম্পানির এদিক দিয়ে রাউটার অন্যতম। বর্তমানে এ রাউটারটি
বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণে জনপ্রিয় ও ব্যবহার হয়ে আসছে। এ রাউটারটির দুটি
এন্টেনা রয়েছে। রাউটারটি ফ্রিকোয়েন্সি রেট ২.৪ গিগাহার্জ। এছাড়া এতে
ব্যান্ডউইথ কন্ট্রোলসহ সিকিউরিটির ব্যবস্থা রয়েছে। ইন্টারনেট স্পিড কন্ট্রোল
সহ আরো অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। বর্তমানে রাউটার দিয়ে বাজার মূল্য
১৮০০ টাকার আশেপাশে।
ASUS RT-N12+
Asus এর ব্যান্ডের মধ্যে কম দামের মধ্যে এ রাউটারটি সবচেয়ে সেরা। দুটি এন্টিনা
যুক্ত রাউটারটি ডাটা ট্রান্সফার রেট 300 এমবিপিএস পর্যন্ত সাপোর্ট করে। তাছাড়া
আপনি রাউটারটিকে রিপিটার হিসেবে অথবা রেঞ্জ এক্সটেন্ডার হিসেবে ব্যবহার করতে
পারবেন। অন্যান্য রাউটার থেকে এই রাউটারে বেশি সুযোগ সুবিধা পাবেন। রাউটারটি
দুই বছরের ওয়ারেন্টি সহ দাম মাত্র ১৪৫০ টাকা।
DIR-615 N300
এই রাউটারটিতে দুটি এন্টিনা রয়েছে। এর সাথে সাথে রাউটারটির ইন্টারনেট
ট্রান্সফার স্পিড ৩০০ এমবিপিএস। তবে বাজারে এ রাউটারটি তিন বছরে ওয়ারেন্টি
সহ মাত্র ১২০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে এই রাউটারের দাম ১২০০ টাকা।
এই রাউটারটি সবচেয়ে আকর্ষণের বিষয় হলো এর সাথে আপনি তিন বছরের ওয়ারেন্টি
পাচ্ছেন। রাউটারটিতে চারটি ল্যান্ড পোর্ট এবং একটি ওয়ান পোর্ট রয়েছে। এছাড়া
এতে হাই সিকিউরিটি ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এটিতে রয়েছে ব্যান্ডউইথ
কন্ট্রোল এর সুবিধা।
TL-WR820N
যদি কম দামের মধ্যে ভালো রাউটার কিনতে চান তাহলে এটি হতে যাচ্ছে আপনার জন্য
সেরা। মাত্র ১৫০০ টাকায় এই রাউটারটি পাচ্ছেন দুটি এন্টেনা সহ ৩০০ এমবিপিএস
ডাটা স্পিড। এর সাথে রয়েছে এক বছরে ওয়ারেন্টি। এ রাউটার দিয়ে আপনি ভিডিও
লাইভ স্ট্রিম করতে পারবেন সুন্দরভাবে।
Tenda F-3
এই রাউটারটি বাসা বাড়ির জন্য ব্যবহার করা উপযোগ্য। রাউটারটিতে তিনটি এন্টেনা
রয়েছে। রাউটারটি ডাটা ট্রান্সফার স্পিড রয়েছে ৩০০ এমবিবিএস। এটিতে চারটি লেন
পোর্ট রয়েছে। এছাড়া এটি ব্যবহার করে ইথারনেট দিয়ে আপনি চারটি কম্পিউটার
কানেক্ট করতে পারবেন। কম দাম এটি সবচেয়ে ভালো রাউটার হবে আপনার জন্য। এই
রাউটারটির প্রাইস ১২০০ টাকার মত।
কোন রাউটার ভালো?
কোন রাউটার ভালো হবে তা মূলত আপনার বাজেটের উপর ও আপনার ইন্টারনেট ব্যবহার উপর
নির্ভর হয়ে থাকে। তবুও আমরা বাছাই করে কয়েকটি ভালো মানের রাউটার এর নাম
বলার চেষ্টা করব যেগুলো আপনার জন্য আশা করি ভালো হবে। নিচে কয়েকটি ভালো
রাউটারের নাম তুলে ধরা হলোঃ
- TP-Link Archer C54 AC1200
- TP-Link Archer C64 AC1200
- Mercusys AC12G AC1200
- Tenda
- Asus RT-AC59U V2 AC1500
- Xiaomi Mi 4A (Regular Edition)
- Asus RT-AX56U AX1800
- Xiaomi Mi 4A (Gigabit Edition)
- Asus RT-AX53U AX1800
- Xiaomi Mi AIoT AX3600
- ASUS RT-AX55 AX1800
- TP-Link TL-WR820N
- Mercusys MW305R
- Xiaomi MI 4C R4CM 300
- Mercusys AC10 AC1200
- P-Link Archer C20 AC750
- Asus RT-AX58U AX3000
উপরোক্ত মডেল গুলো আপনার জন্য ভালো হতে পারে, তবে আপনি চেক করে দেখে শুনে
নিবেন। আর উপরোক্ত মডেল গুলো আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করলেই ছবিসহ দেখতে
পাবেন। আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করে তাদের রাউটারটি নির্বাচন করে কিনে
নিন। তবে অবশ্যই রাউটার কিনার পূর্বে ভালো রাউটার চেনার উপায় গুলো জেনে
নিবেন এবং ভালো রাউটার কিনে দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন।
ভালো রাউটার চেনার উপায় সম্পর্কে FAQs
রাউটার ও ওয়াইফাই এর মধ্যে পার্থক্য কি?
রাউটার মূলত ওয়াইফাই সিগনাল দিয়ে থাকে। যেখানে আমরা রাউটারের ওয়াইফাই
সিগন্যাল কানেক্ট করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি। আর ওয়াইফাই বলতে এটি
মূলত এক প্রকার সিগনাল যা ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালানো যায়।
রাউটার কত প্রকার?
আমাদের জানামতে রাউটার সাধারণত পাঁচ প্রকার।
দশ এমবিপিএস আপলোড স্পিড কি ভালো?
নরমাল ব্যবহার করার জন্য ১০ এমবিপিএস আপনার স্পিড ভালো, তবে যাদের অধিক
স্পিডের প্রয়োজন তারা চাইলে ১০ এমবিপিএস এর বেশি স্পিড সম্পূর্ণ wi-fi
লাইন নিতে পারেন।
রাউটার কোন মডেলের চেনার উপায়?
রাউটারের পিছনে থাকা স্টিকার দেখে রাউটারের মডেল নাম্বার দেখতে পারবেন। বা
রাউটারের ম্যানুয়াল কাগজে মডেল নাম্বার লেখা থাকে।
উপসংহার
আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটিতে ভালো রাউটার চেনার উপায় ও সবচেয়ে ভালো
রাউটার কোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেছি। অনেকগুলো আমরা বিষয়ে
আলোচনা করছি যেগুলো মাথায় রেখে রাউটার ক্রয় করতে হয়। আপনার অবশ্যই সে
বিষয়গুলো বিবেচনা করে এটি ভালো মনের রাউটার ক্রয় করবেন।
আর অবশ্যই পুরাতন রাউটার ক্রয় করা থেকে বিরত থাকবেন, কারণ অনেক সময় পুরাতন
রাউটার সঠিক স্পিড প্রদান করে না , তাতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে
থাকে। এজন্য ভালো মানের নতুন রাউটার ক্রয় করার চেষ্টা করুন।